চট্টগ্রাম, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত: সেতুমন্ত্রী

প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর, ২০২২ ৩:১৪ : অপরাহ্ণ

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিএনপি এ সংকটময় পরিস্থিতি বিবেচনা না করে মিথ্যাচার করছে।

বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিশ্বমানবতা আজ এক অনাকাঙ্ক্ষিত সংকট অতিবাহিত করছে। পৃথিবীর বৃহৎ অর্থনীতির দেশসমূহকেও আশঙ্কাজনক অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের প্রায় সব রাষ্ট্রেই খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধিসহ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকটের সৃষ্টি হয়েছে, যার অভিঘাতে বাংলাদেশও এক অনাকাঙ্ক্ষিত সংকটের মুখোমুখি। বৈশ্বিক এ পরিস্থিতি বিবেচনা না করে বিএনপি নেতারা কাণ্ডজ্ঞানহীনভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় প্রতিটি বিরোধী দলের দেশ ও জনগণের প্রতি দায়িত্ব এবং কর্তব্য রয়েছে। কিন্তু মির্জা ফখরুলরা দায়িত্বশীল বিরোধী দলের ভূমিকা পালন না করে তাদের চিরায়ত মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তির রাজনীতি অব্যাহত রেখেছেন।

সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে ‘হাওয়া ভবন’ খুলে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিল। গণবিরোধী নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও কর্মপ্রয়াসের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি সম্ভাবনাময় অর্থনীতির রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বসভায় অনন্য মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, যাদের সময় বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলন করায় জনগণের বুকে গুলি চালানো হয়েছিল। যারা জাতীয় গ্রিডে এক ইউনিট বিদ্যুৎও জোগান দিতে পারেনি। তারা আজকের সংকট নিয়ে অর্বাচীন মন্তব্য করবে এটাই স্বাভাবিক।

তিনি আরো বলেন, করোনার অভিঘাতের মধ্যেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সমগ্র বিশ্ব এক মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি। মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির কারণে সারাবিশ্বে খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা চরম হুমকির মুখে পড়েছে। বিশ্বের গড় প্রবৃদ্ধি মারাত্মকভাবে অবনমনের দিকে। নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার চরম মূল্য দিতে হচ্ছে উন্নয়নশীল, স্বল্পোন্নত ও গরিব দেশসমূহকে। এ পরিস্থিতির মধ্যেও সরকার স্থিতিশীলতা বজায় রেখে সংকট মোকাবিলায় প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ সংকট মোকাবিলায় সাময়িক রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এ সংকট সমাধানের উপায় হলো নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। নবায়নযোগ্য জ্বালানির অন্যতম উৎস পারমাণবিক শক্তি। সেই লক্ষ্য অর্জনে সরকার আগে থেকেই স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এরই মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।

সেতুমন্ত্রী বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, বর্তমান সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে একদিকে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে, অন্যদিকে শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নির্ভর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অবারিত দ্বার উন্মোচিত হওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কারণে লোডশেডিং ছাড়াই বিপুল এ চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু বৈশ্বিক সংকটের কারণে সাময়িক কৃচ্ছতা সাধন ও পরিস্থিতি মোকাবিলার স্বার্থে বিদ্যুতে রেশনিং ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার সংকট মোকাবিলায় অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ কথা আজ প্রমাণিত যে, বৈশ্বিক এ সংকট মোকাবিলা করে দেশের অগ্রগতি ধরে রাখার মতো নেতৃত্ব যদি কেউ থেকে থাকেন তিনি হলেন শেখ হাসিনা।

দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, অতীতের ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা অব্যাহত রাখুন। ইনশাল্লাহ, শেখ হাসিনার গৃহীত সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এই সংকট মোকাবিলায় সক্ষম হবো।

Print Friendly and PDF