প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর, ২০২২ ১০:৫৭ : পূর্বাহ্ণ
সাংবিধানিক দায়িত্ব থেকেই ইভিএম কেনার প্রকল্প অনুমোদন দিতে চায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। তবে এর ব্যয় নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে অর্থ বিভাগ। পরিকল্পনামন্ত্রী জানালেন, নতুন ইভিএম কিনলে শিক্ষা, স্বাস্থ্যের মত খাত থেকে বরাদ্দ কাঁটছাট হতে পারে। তবে এ মন্তব্য ভাবাচ্ছে বিশ্লেষকদের। তারা বলছেন, চলমান অর্থনৈতিক টানাপোড়েনে প্রকল্পের ব্যয় নিয়ে সাবধানী হতে হবে সরকারকে।
আসছে জাতীয় নির্বাচনে সর্বোচ্চ দেড়শ আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয় সেপ্টেম্বরে। সে জন্য ৮ হাজার ৭১১ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। একনেক অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু, এ ইস্যুতে সভা আহ্বান করেও পরে তা বাতিল করে পরিকল্পনা বিভাগ। তাই এখনও ঝুলে আছে নতুন ২ লাখ ইভিএম কেনার সিদ্ধান্ত।
প্রকল্প প্রস্তাবে প্রতিটি যন্ত্রের দাম ধরা হয়েছে ৩ লাখ টাকা। এর সাথে যুক্ত হবে ভ্যাট ও অন্যান্য শুল্ক। ইভিএম সংরক্ষণের জন্য ১০টি অঞ্চলে থাকবে আলাদা ওয়্যারহাউজ। এসব পরিবহনের জন্য প্রতিটি থানা ও উপজেলা অফিসে গাড়ি কেনার টাকাও ধরা হয়েছে। অর্থ ব্যয় হবে ইভিএম ব্যবস্থাপনা ও জনবল প্রশিক্ষণেও।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানালেন, রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব থেকেই ইভিএম প্রকল্প অনুমোদনে বাধ্য সরকার। তবে প্রকল্পের ব্যয়সহ একাধিক ইস্যুতে আলোচনার সুযোগ রয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন- নির্বাচনের দায়, সাংবিধানিক দায়- এগুলো এমনিই কোনো দায় নয়। এগুলোকে প্রতিপালন করতে হবে। যারা রাজনীতি করেন তারা যদি বলেন যে মহামান্য কমিশন আমরা এই কারণে পারছি না, তারা অবশ্যই বুঝবে। তারাও তো মানুষ, তারা একটা বিকল্প বের করবে। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র শিক্ষা ও স্বাস্থ্য। এসব ক্ষেত্রে আঘাত পড়বে, কারণ এটা টাকার ব্যাপার। আমি চাইবো না কিন্তু আঘাত পড়ে যাবে। সেটা জাতি হিসেবে আমাদের সবাইকে শেয়ার করতে হবে।
তার মানে, চলমান অর্থনৈতিক বাস্তবতায় ইভিএম কিনতে কিছুটা চাপে পড়বে সরকার। তাই ইসির প্রস্তাব নিয়ে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি অর্থ বিভাগ। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইভিএম কেনার প্রকল্প অনুমোদনের আগে অনেক দিক মাথায় রাখতে হবে সরকারকে।
এ প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, এটা পুরোপুরি একটা অর্থনৈতিক বিষয় না। একটা ইলেকশনের ব্যাপার আছে যা ওয়ান হানড্রেড পারসেন্ট পলিটিক্যাল। যদি ইকোনমিক দৃষ্টিতেও দেখেন- তাহলে যে ব্যয়গুলো এখন না করলেও চলে, বিকল্প ব্যবস্থায় সেসব প্রয়োজন মেটানো যেতে পারে। সেগুলো আমরা এখন কেনো করবো? যেমন ধরুন-জ্বালানী নিরাপত্তা বা খাদ্য নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলো।
নির্বাচন কমিশনের দাবি, এখন পর্যন্ত ইভিএমের পক্ষে মত দিয়েছে ১৭টি রাজনৈতিক দল। আর বিরোধিতা করেছে ১২টি।