চট্টগ্রাম, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ , ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাম্বিয়ায় মৃত্যুর পর কাশির সিরাপ উৎপাদন বন্ধ করেছে ভারত

প্রকাশ: ১২ অক্টোবর, ২০২২ ৫:৩০ : অপরাহ্ণ

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এর প্রতিবেদনের পর ভারতীয় ওষুধ প্রস্ততকারক মেডেন ফার্মাসিউটিক্যালস কাশির সিরাপ উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। ভারতের একজন প্রতিমন্ত্রীর বরাত দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। ডব্লিউএইচও গত সপ্তাহে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই কোম্পানির তৈরি কাশির ওষুধ খেয়ে গাম্বিয়ায় অন্তত ৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

হরিয়ানা রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনিল ভিজ বুধবার বলেন, কর্তৃপক্ষ রাজ্যের সোনিপাত শহরের কাছে একটি মেডেন কারখানা পরিদর্শন করেছে।

সেখানে ১২ নিয়ম লঙ্ঘন পায় তারা। পরে মেডেন ফার্মাসিউটিক্যালসকে উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।

ওয়েবসাইটে দেওয়া মেডেনের তথ্য মতে, প্রতিষ্ঠানটি তিনটি কারখানায় বছরে ২.২ মিলিয়ন বোতল সিরাপ, ৬০০ মিলিয়ন ক্যাপসুল, ১৮ মিলিয়ন ইনজেকশন, ৩ লাখ মলম টিউব এবং ১.২ বিলিয়ন ট্যাবলেট উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। কোম্পানিটি এসব ওষুধ দেশের চাহিদা মিটিয়ে এশিয়া, আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকার দেশে রপ্তানি করে।

এর আগে,গাম্বিয়ায় স্থানীয়ভাবে বিক্রি হওয়া প্যারাসিটামল সিরাপ খাওয়ার তিন থেকে পাঁচ দিন পর বেশ কিছু শিশু কিডনির সমস্যায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিল গত জুলাই মাসে। এর পর গাম্বিয়ার মেডিক্যাল অফিসাররা আশঙ্কা প্রকাশ করে। অবশেষে সেই আশঙ্কায় সত্যি হয়েছে, দূষিত কাশির সিরাপ খাওয়ায় এ পর্যন্ত ৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে গত বুধবার জানিয়েছিল, ডব্লিউএইচও।

ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস সাংবাদিকদের বলেন, জাতিসংঘের সংস্থাটি ভারতীয় নিয়ন্ত্রকদের সাথে ওষুধ প্রস্তুতকারী, নয়াদিল্লি ভিত্তিক মেডেন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যাপারে একটি তদন্ত পরিচালনা করছে। ভারতীয় ওষুধ প্রস্ততকারক দ্বারা তৈরি এসব দূষিত কাশির সিরাপ খেয়ে কিডনিতে আঘাতের কারণে গাম্বিয়ার কয়েক ডজন শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি।

তবে এ ব্যাপারে মেডেন ফার্মা মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায়। ভারতের ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেলকে কল এবং বার্তা পাঠানো হলেও রয়টার্সের উত্তর দেয়নি তারা।

এ ঘটনায় ডাব্লিউএইচও একটি মেডিকেল পণ্য সতর্কতা জারি করেছে, যাতে মেডেন ফার্মার পণ্যগুলি বাজার থেকে সরাতে বলা হয় নিয়ন্ত্রকদের। সতর্কতাটি চারটি পণ্য কভার করে এগুলো হল- প্রোমেথাজিন ওরাল সলিউশন, কফেক্সমালিন বেবি কফ সিরাপ, মেকফ বেবি কফ সিরাপ এবং ম্যাগ্রিপ এন কোল্ড সিরাপ।

ল্যাব বিশ্লেষণ নিশ্চিত হয়ে ডাব্লিউএইচও বলছে, ‘অগ্রহণযোগ্য’ পরিমাণে ডাইথাইলিন গ্লাইকোল এবং ইথিলিন গ্লাইকোল, যা খাওয়ার সময় বিষাক্ত হতে পারে।

এর আগে গাম্বিয়ার সরকার গত মাসে জানিয়ে ছিল, এসব মৃত্যুর তদন্ত করছে তারা। জুলাইয়ের শেষের দিকে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে তীব্র কিডনি আঘাতের ক্ষেত্রে একটি স্পাইক সনাক্ত করে তারা। এরপর আগস্টে ২৮ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করে গাম্বিয়া এবং আশঙ্কা প্রকাশ করে যে, আগামীতে এই মৃত্যু আরও বাড়তে পারে।

Print Friendly and PDF