চট্টগ্রাম, রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাড়ছে চোখ ওঠা রোগীর সংখ্যা, যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ৩:৩৪ : অপরাহ্ণ

দেশে হঠাৎ করেই আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে চোখ ওঠার সমস্যা। প্রায় প্রতিটি ঘরেই কেউ না কেউ এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। রোগটি ছোঁয়াচে হওয়ায় দ্রুত অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। তবে সাত থেকে দশদিনে এ রোগটি এমনিতে ভাল হয়ে যায়। তাই আতঙ্কিত না হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

ঢাকার আনোয়ার খান মডার্ণ কলেজ ও হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. জাকিয়া সুলতানা সহীদ এ বিষয়ে চ্যানেল 24 অনলাইনকে বলেন, চোখ ওঠা একটি ভাইরাল ইনফেকশন। ঋতু পরিবর্তনের ফলে ভাইরাল ইনফেকশন হচ্ছে। কনজাংটিভাইটিসে অনেকেই এখন আক্রান্ত হচ্ছেন। বড় থেকে শুরু করে কম বয়সীদের মধ্যেও এ রোগটিতে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।

অধ্যাপক ডা. জাকিয়া আরও বলেন, এই রোগ কখনো বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায় না। এটি আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিসপত্র অন্যজন ব্যবহার করলে সংক্রমণ বাড়ে। যেমন- বাসার তোয়ালে, বালিশ, পানি পান করার পাত্র এগুলো একে অন্যেরটা ব্যবহার করে। ফলে একজন আক্রান্ত হলে অন্যরা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এ সংক্রমণটি দ্রুত ছড়ায়।

লক্ষণ

এ রোগের লক্ষণ জানতে চাইলে এ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জানান, এ রোগের প্রাথমিক লক্ষণ হচ্ছে চোখের নিচের অংশ লাল হয়ে যাওয়া। চোখে ব্যথা, খচখচ করা ও অস্বস্তি অনুভব করা। চোখ থেকে পানি পড়তে থাকে। পাশাপাশি চোখ ফুলে লাল হয়ে যায়। এছাড়াও চোখ চুলকাতে থাকে। চোখে আলো পড়লে খুব অস্বস্তি লাগে।

চিকিৎসা

এ রোগ নিরাময়ে ওষুধের তেমন প্রয়োজন হয় না জানিয়ে অধ্যাপক ডা. জাকিয়া বলেন, বারবার চোখ পরিষ্কার করতে হবে। যদি ইনফেকশন হয়, তাহলে এন্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। সাধারণত কিছু দিন পর রোগটি এমনিতেই সেরে যায়। তবে চোখে দেখতে অসুবিধা হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। সেই সঙ্গে নিম্নোক্ত চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

# এন্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করতে হবে, যাতে অন্যকোন ব্যাকটেরিয়া না ঢুকতে পারে।

# ব্যথা থাকলে পেইন কিলার হিসেবে প্যারাসিটামল খাবেন।

সতর্কতা

এ রোগটি নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশের মতো জনবহুল ও ঘনবসতিপূর্ণ দেশে এ রোগে কেউ আক্রান্ত হলে দ্রুত অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে মানুষের ভিড় বেশি সেখানে রোগটি বেশি ছড়ায়। এটি একজন থেকে আরেকজনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ায়। তাই যথাসম্ভব ভীর এড়িয়ে চলতে হবে।

অসুস্থ ব্যক্তিকে পরিবারের অন্য সদস্যদের থেকে আলাদা থাকার পরামর্শ দিয়ে এ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জানান, যার চোখ ওঠা সমস্যা দেখা দেবে, সে পরিবারের অন্যদের থেকে সে আলাদা থাকবে। অসুস্থতার মধ্যে অন্য ইনফেকশন হলে রোগীর জটিলতা তৈরি হয়। এজন্য এ সময়ে আলাদা জীবন-যাপন করলে নিজে এবং অন্যরাও ভালো থাকবে।

Print Friendly and PDF