চট্টগ্রাম, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ , ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রেমের টানে ভারতে নোয়াখালির কবির, অতঃপর প্রেমিকার অভিযোগে…

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১২:৩৮ : অপরাহ্ণ

ভারতীয় প্রেমিকার প্রেমের টানে ভারতে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের মোহাম্মদ কবির। ভাগ্যের পরিহাসে সেই প্রেমিকার অভিযোগেই ঠাঁই হয় মুর্শিদাবাদের কারাগারে। ৩ বছর জেলে কাটানোর পর অবশেষে আদালত মুক্তি দিয়েছে তাকে।

সংশোধনাগার থেকে বেরিয়ে তাই চোখের জল বাঁধ মানছে না কবিরের। বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে মুক্ত হয়ে তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন ভারতের আইনি পরিষেবাকে। রোববার বেনাপোল বন্দর দিয়ে দেশে ফিরেছেন তিনি।

জানা গেছে, সোশ্যাল মিডিয়া সাইট ফেসবুকের মাধ্যমে বাংলাদেশের নোয়াখালির বাসিন্দা মোহাম্মদ কবির হোসেনের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ডোমকলের বাসিন্দা এক মেয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বছর তিনেক আগে কবিরকে ডোমকলে ডেকে পাঠায় ওই তরুণী।

সেখানে যাওয়ার পর তার নামে থানায় অভিযোগ জানিয়ে গ্রেপ্তার করানো হয়। তারপর থেকে জেলেই ছিলেন কবির হোসেন। বাংলাদেশী নাগরিক হওয়ায় প্রথম দিকে তিনি কোনো আইনজীবী পাননি। গেল কয়েক মাস আগে এই বিষয়টি ভারতের আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। তারপর কবিরের ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য আইনজীবী নীলাঞ্জন পাণ্ডেকে বিনামূল্যে তার হয়ে মামলা লড়ার জন্য নিয়োগ করা হয়।

কয়েক মাসের দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে অবশেষে জয় হয়েছে কবিরের। সেই মামলায় তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগই প্রমাণিত হয়নি। তারপরেই কবিরকে বেকসুর খালাস করেন মুর্শিদাবাদ জেলা আদালত।

মুক্তি মিলতেই আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন তিনি। বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে বেরিয়ে ছলছল চোখে বলেন, ‘ভালবাসার নামে এদেশে এসে এমন ভাবে জেল খাটতে হবে ভাবিনি!’

মুক্তির আনন্দ, নাকি ভালবাসায় প্রতারিত হওয়ার যন্ত্রণা? কণ্ঠ ভারী হয়ে এলো কবিরের। তিনি বলেন, ‘ভারতের আইন ব্যবস্থাকে ধন্যবাদ জানাই। জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সাহায্য না পেলে আমি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে বেরোতেই পারতাম না।’

কবিরের আইনজীবী নীলাঞ্জন বলেন, প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে সীমান্ত পেরিয়ে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ডোমকলে এসে পৌঁছান কবির। ছেলেটিকে কিছু গোপন ছবি পাঠায় ওই তরুণী। তারপর তার মনে হয় সেই ছবি নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে পারেন কবির! তাই সেই আতঙ্ক থেকেই ছলে-বলে-কৌশলে প্রেমিককে এপারে ডেকে আনেন তিনি। তারপর প্রেমিকের বিরুদ্ধে নিজেই শ্লীলতাহানি ও প্রতারণার মামলায় মিথ্যে অভিযোগ করে ফাঁসিয়ে দেন।

তিনি আরও বলেন, ওই যুবকের বিরুদ্ধে ৩৫৪ ধারায় মামলা হয়েছিল। জেলা আইনি সহায়তা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান তথা জেলা জজ সৌমেন্দ্রনাথ দাস এবং জেলা আইনি সহায়তা কেন্দ্রের সম্পাদক সুব্রত ঘোষসহ সকলের সহযোগিতায় দ্রুত আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে তার মুক্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

Print Friendly and PDF