প্রকাশ: ২৬ জুন, ২০২২ ১০:৫৫ : পূর্বাহ্ণ
স্বপ্নের পদ্মা সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। রোববার (২৬ জুন) ভোর ৬টা থেকে সব ধরনের যান চলাচল শুরু হয়েছে বহু প্রতীক্ষিত এ স্থাপনার ওপর দিয়ে।
অনেকেই গভীর রাতে এসে শরীয়তপুরের জাজিরা টোল প্লাজার সামনে এসে অপেক্ষায় থাকেন। পরে নির্ধারিত সময়ে সেই অপেক্ষার পালা শেষ হয়।
জীবনের প্রথম পদ্মা সেতু পারাপার হওয়ায় অনেকেই আনন্দ-উল্লাস প্রকাশ করেছেন। দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন ছুটে এসেছে কালের সাক্ষী হতে। উচ্ছ্বাস করতে দেখা গেছে। দীর্ঘ দিনের নদী পথের ভোগান্তির শেষ পদ্মা সেতুকে সক্ষমতার প্রতীক হিসেবে দেখছেন যাত্রী ও পরিবহন চালকরা। নির্ধারিত মূল্যে টোল দিয়ে সেতু পার হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাধারণ মানুষের মধ্যে ছিল উৎসব। অনেকেই মোটরসাইকেল নিয়ে পদ্মা নদী পার হচ্ছেন।
গণপরিবহনের আগেও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের পরিবহন আনুষ্ঠানিক পদ্মা সেতু পার হলেও এবারই প্রথম যাত্রী পারাপার শুরু হয়েছে।
মাগুরা থেকে আসা দোলা পরিবহনের চালক আতিয়ার হোসেন বলেন, ‘রাত ৯টা থেকে অপেক্ষায় ছিলাম। কখন পদ্মা পারি দিবো। অবশেষে সেই অপেক্ষার পালা শেষ হলো। খুব ভোরেই টোল প্লাজার সামনে হাজির হলাম। টোলও দিয়েছি। আল্লাহর নামে চললাম। দীর্ঘ দিন ধরে ফেরিতে যে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে তার সমাপ্ত হলো আজকে।’
মোটরসাইকেল যোগে বাগেরহাট থেকে আসা রিপন ফরাজী বলেন, ‘অনেক ইচ্ছে ছিল প্রথমই পদ্মা সেতু পার হবো। তাই রাতে আসছি। সর্বপ্রথম পার হচ্ছি দাবি করবো না, তবে আমার আগে কোনো মোটরসাইকেল আজ পার হয়নি। প্রশাসন বা অন্য কোনো দপ্তরের মোটরসাইকেল আগে পার হতে পারে কিন্তু আমি আজ সর্বপ্রথম পার হচ্ছি বলে মনে হচ্ছে।’
সার্বিক পরিবহনের চালক ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ‘আমাদের ঈদের মতো খুশি লাগছে। যে দুর্ভোগ ঘাটে পোহাতে হয়েছে, তা থেকে মুক্তির দিন-ক্ষণ। সার্বিক পরিবহনের নতুন পরিবহনও মাঠে নামানো হয়েছে। নতুন গাড়ি আর আত্মীয়-স্বজন নিয়ে প্রথম পদ্মা সেতু পার হচ্ছি। এ এক ভিন্ন মজার অভিজ্ঞা। কালের সাক্ষী হয়ে রইলাম আমরা। নতুন প্রজন্ম দেখবে কিন্তু আমরা সেটার শুরু করলাম।’
এদিকে, বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের জারি করা গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পদ্মা সেতুতে ৬০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে গাড়ি চালানো যাবে না।
এর আগে শনিবার (২৫ জুন) সকাল ১১টায় মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২১ জেলার সঙ্গে সড়ক পথে যোগাযোগের নতুন দিগন্ত সূচিত হলো। ফলে আনন্দিত এসব এলাকার সাধারণ মানুষ।