প্রকাশ: ১২ মে, ২০২২ ১:০২ : অপরাহ্ণ
বিশ্বখ্যাত আগ্রার ঐতিহাসিক স্মৃতি সৌধ তাজমহলকে এবার ভারতের জয়পুরের সাবেক রাজপরিবার নিজেদের বলে দাবি করেছে।
গতকাল বুধবার সংবাধমাধ্যম ‘আজতক’ এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জয়পুরের সাবেক রাজপরিবারের সদস্যা ও বিজেপি এমপি দিয়া কুমারী বলেন, ‘তাজমহল আমাদের সম্পত্তি। যা আমাদের পারিবারিক প্রাসাদের সম্পত্তির উপর নির্মিত’।
দিয়া কুমারী দাবি করে বলেন, তার কাছে নথি রয়েছে যা দেখায় যে তাজমহল আগে জয়পুরের সাবেক রাজপরিবারের একটি প্রাসাদ ছিল, যা শাহজাহান দখল করেছিলেন।
দিয়া কুমারী আরও বলেন, শাহজাহান যখন জয়পুর পরিবারের এই প্রাসাদ ও জমি নিয়েছিলেন, তখন মুঘল সরকার ছিল। তাই তাকে প্রতিরোধ করা যায়নি।
তিনি বলেন, আজও সরকার কোনো জমি অধিগ্রহণ করলে তার বিনিময়ে ক্ষতিপূরণ দেয়। কিন্তু এর বিনিময়ে কোনো ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি বলে শুনেছি। সে সময় এমন কোনো আইন ছিল না যে কেউ তার বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবে বা তার বিরুদ্ধে কিছু করতে পারবে। এখন কেউ ওই বিষয়ে আওয়াজ তুলে আদালতে পিটিশন দাখিল করলে ভালো হয়।
দিয়া কুমারী বলেন, বন্ধ কক্ষ খুলে তাজমহল আগে কী ছিল তা খুঁজে বের করতে হবে। বলেন, আমি বলব না যে তাজমহল ভেঙে ফেলতে হবে, তবে এর ঘরগুলো খুলে দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, তাজমহলের কিছু কক্ষ বন্ধ রয়েছে। কিছু অংশ সেখানে দীর্ঘদিন সিলগালা করে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে অবশ্যই তদন্ত হওয়া উচিত এবং এটি খোলা উচিত। যাতে জানা যায় সেখানে কী ছিল, কী ছিল না। এই সমস্ত তথ্য তখনই স্থিতিশীল হবে যখন একবার সঠিক তদন্ত হবে এবং যখন আদালত নির্দেশ দেবে যে তাজমহল আগে কী ছিল তা জানা উচিত।
অন্যদিকে, ইলাহাবাদ হাই কোর্টে মামলা দায়ের করে অযোধ্যা জেলার বিজেপি ‘মিডিয়া ইনচার্জ’ রজনীশ সিং ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই)-এর তত্ত্বাবধানে তাজমহলের ‘আসল ইতিহাস’ অনুসন্ধানের দাবি জানিয়েছেন। আদালত সেই মামলা শুনানির আবেদন গ্রহণ করেছে।
রজনীশের আইনজীবী রুদ্রবিক্রম সিংহ বুধবার বলেন, ‘হিন্দু সন্তেরা মনে করেন ‘তেজো মহালয়’ নামে একটি শিব মন্দিরের উপরে ওই তাজমহল গড়া হয়েছে।
তাজমহল ভারতের আগ্রায় অবস্থিত একটি রাজকীয় সমাধি। মুঘল সম্রাট শাহজাহান তাঁর স্ত্রী আরজুমান্দ বানু বেগম যিনি মুমতাজ মহল নামে পরিচিত, তার স্মৃতির উদ্দেশ্যে এই অপূর্ব সৌধটি নির্মাণ করেন। সৌধটি নির্মাণ শুরু হয়েছিল ১৬৩২ খ্রিস্টাব্দে যা সম্পূর্ণ হয়েছিল প্রায় ১৬৫৩ খ্রিস্টাব্দে। সৌধটির নকশা কে করেছিলেন এ প্রশ্নে অনেক বিতর্ক থাকলেও, এ পরিষ্কার যে শিল্প-নৈপুণ্যসম্পন্ন একদল নকশাকারক ও কারিগর সৌধটি নির্মাণ করেছিলেন যারা উস্তাদ আহমেদ লাহুরীর সাথে ছিলেন, যিনি তাজমহলের মূল নকশাকারক হওয়ার প্রার্থীতায় এগিয়ে আছেন।
তাজমহলকে মুঘল স্থাপত্যশৈলীর একটি আকর্ষণীয় নিদর্শন হিসেবে মনে করা হয়, যার নির্মাণশৈলীতে পারস্য, তুরস্ক, ভারতীয় এবং ইসলামী স্থাপত্যশিল্পের সম্মিলন ঘটানো হয়েছে। যদিও সাদা মার্বেলের গোম্বুজাকৃতি রাজকীয় সমাধীটিই বেশি সমাদৃত, তাজমহল আসলে সামগ্রিকভাবে একটি জটিল অখণ্ড স্থাপত্য। এটি ১৯৮৩ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতম তাজমহল।