চট্টগ্রাম, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ , ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তীল ধারণের ঠাঁই নেই সমুদ্রসৈকতে

প্রকাশ: ৪ মে, ২০২২ ৪:১৬ : অপরাহ্ণ

ঈদের টানা ছুটিতে লাখো পর্যটকের ঢল নেমেছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে। তীল ধারণের ঠাঁই নেই সৈকতের ৩ কিলোমিটার সাগরতীরে। ভ্রমণপিপাসুরা বলেন, পরিবার-পরিজন বা প্রিয়জনকে সময় দিতে টানা ছুটিতে কক্সবাজার ছুটে আসা। সাগর উত্তাল হওয়ায় সমুদ্রস্নানে পর্যটকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ লাইফ গার্ড কর্মীদের।

সাগরের উত্তাল ঢেউ, এই ঢেউয়ের নোনাজলে মেতেছেন পর্যটকরা। নোনাজলে যেন মহাব্যস্ত সবাই। সমুদ্রস্নান, টিউবে গা ভাসানো, ওয়াটার বাইকে ঘুরে বেড়ানো ও প্রিয় মুহূর্তগুলো ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দি করে আনন্দে সময় পার করছেন ভ্রমণপিপাসুরা। আবার অনেকেই বালিয়াড়িতে ঘোড়ার পিঠে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।


সুগন্ধা পয়েন্টে কথা হয় ঢাকা থেকে আগত পর্যটক রিমা রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতিবছর ঈদের টানা ছুটিতে কক্সবাজার ভ্রমণ আসি। কিন্তু করোনার কারণে গেল দু’বছর কক্সবাজার সৈকতে আসতে পারিনি। তাই এবার সুযোগ পেয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে কক্সবাজার ছুটে এসেছি। সবাই একসঙ্গে খুব মজা করছি।

আরেক পর্যটক সাইদুর রহমান বলেন, ব্যাংকে চাকরি। তাই টানা ৯ দিনের ছুটিতে কক্সবাজার ছুটে আসা এবার।
রিয়াদ, শহীদ ও রায়হান বলেন, ঈদের ছুটিতে কক্সবাজার আসব না এটা হতে পারে না। তাই বন্ধুরা সবাই মিলে সৈকতে চলে এলাম। সাগরের নোনাজলে বেশ মজা করছি।

বুধবার (৪ মে) সকালে হাল্কা বৃষ্টি হয়েছে, আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। যার কারণে সাগর উত্তাল, তাই সতর্ক অবস্থানে লাইফ গার্ডকর্মীরা। তবে সমুদ্রস্নানে পর্যটকদের নির্দেশনা মেনে চলার পরামর্শ তাদের।

সি সেইফ লাইফ গার্ডের সুপারভাইজার সাইফুল্ল্যাহ সিফাত বলেন, ঈদের টানা ছুটিতে সৈকতে লাখো পর্যটকের আগমন হয়েছে। তাই সৈকতের প্রতিটি পয়েন্টে লাইফ গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। তারা সার্বক্ষণিক ওয়াচ টাওয়ার থেকে পর্যবেক্ষণ করছে। কিন্তু এতো পর্যটকের সমুদ্রস্নানে নিরাপত্তায় স্বল্প লাইফ গার্ড দিয়ে খুবই কষ্টসাধ্য। তাই এক্ষেত্রে পর্যটকদের সমুদ্রস্নানে সতর্ক হওয়ার পাশাপাশি নির্দেশনা চলার অনুরোধ করছি।

আর ট্যুরিস্ট পুলিশ জানিয়েছে, পর্যটকদের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক টহল জোরদার করেছেন তারা।

ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম বলেন, সৈকতে দুই লাখের বেশি পর্যটকের আগমন হয়েছে। তাই আগত পর্যটকদের গাড়ি থেকে নামা, হোটেলে ওঠা ও সৈকতে আসা পর্যন্ত সবখানে ট্যুরিস্ট পুলিশ সার্বক্ষণিক দায়িত্বপালন করছে। আর গরমকালে পর্যটকদের পিপাসা মেটাতে সৈকতের বালিয়াড়িতে স্থাপিত সেবা কেন্দ্র থেকে পানি পান করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শতভাগ পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
ঈদের টানা ছুটিতে পর্যটকদের বিনোদন দিতে তারকামানের হোটেলগুলোতে চলছে নানা আয়োজন।

হোটেল কক্স টুডের মহাব্যবস্থাপক আবু তালেব শাহ বলেন,  আমরা পর্যটকদের জন্য নানা আয়োজন রেখেছি। যাতে তারা এবারের ঈদের ছুটি ভালোভাবে কাটাতে পারেন। ঈদের দিন এবং ঈদের পরের দিন অতিথিদের জন্য বিশেষ মেহেদি উৎসব চলছে হোটেলের লবিতে। চলবে আরও তিন দিন। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পর্যটককে মেহেদি লাগিয়ে দিচ্ছে আমাদের কর্মীরা।

সমুদ্রসৈকত ছাড়াও এখানে রয়েছে মেরিন ড্রাইভ, হিমছড়ি ঝরনা , ইনানী ও পাটুয়ারটেকের পাথুরে সৈকত, শহরের অজ্ঞমেধা ক্যাং ও বার্মিজ মার্কেট, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক এবং রামুর বৌদ্ধমন্দিরসহ নানা জনপ্রিয় ভ্রমণ স্পট।

Print Friendly and PDF