প্রকাশ: ২ মে, ২০২২ ৪:০১ : অপরাহ্ণ
ঈদ মানে আনন্দ। আর সেই আনন্দ আরও বাড়িয়ে দেয় ঈদের সালামি। সালামিতে নতুন নোট দেওয়ার রেওয়াজ বেশ পুরনো। এ কারণে অনেকেই ব্যাংকে ছোটেন নতুন নোটের খোঁজে। রাজধানীতে ব্যাংকের বাইরেও পাওয়া যায় নতুন নোট। ঈদকে কেন্দ্র করে গুলিস্তানের ফুটপাতে জমে উঠেছে নতুন নোটের রমরমা বাণিজ্য। একটি বান্ডিলে (১০০টি নোট) প্রতি নোট ভেদে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা করে নিচ্ছেন বিক্রেতারা। জানা গেছে, প্রতিদিন এক একটি দোকানে ৫ থেকে ২০ লাখ টাকার লেনদেন হচ্ছে।
গুলিস্তানে টাকার কারবারিদের ব্যবসা অনেক দিনের। সারা বছর ছেঁড়া নোট বদলের ব্যবসা করেন তারা। তবে ঈদের সময় নতুন নোটের ব্যবসা বেশ জমজমাট। ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদের সময়ে ২, ৫, ১০, ২০ টাকার নতুন নোটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। ব্যাংকে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়েও অনেক সময় নতুন নোট পাওয়া যায় না। এ কারণে এখানে বেশ ভিড়। এবার লম্বা সময় ব্যাংক বন্ধ থাকায় টাকার কারবারিদের ব্যবসা বেড়েছে কয়েকগুণ।
টাকার কারবারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই চাহিদার তুলনায় ২ টাকার নোটের সরবরাহ কম থাকায় এ নোটের জন্য খরচ করতে হচ্ছে বেশি। দুই টাকার ১০০টি নোটের বান্ডিলের জন্য ক্রেতাকে দিতে হচ্ছে ৩০০ টাকা। ৫ টাকার নোটের বান্ডিলের জন্য ৮০০, ১০ টাকার বান্ডিলের জন্য ১৫০০, ২০ টাকার নোটের বান্ডিলের জন্য ২৫০০, আর ৫০ টাকার নোটের বাণ্ডিল বিক্রি হচ্ছে ৫২০০ টাকা। ঈদে ১০০ ও ৫০০ টাকার চাহিদা কম থাকায় এই নোটের জন্য বান্ডিলে অতিরিক্ত ১০০-২০০ টাকা নেন দোকানিরা।
রাজধানীর মিরপুর থেকে নতুন নোট নিতে এসেছেন ফাহিম হোসেন। তিনি বলেন, ‘নতুন জামা, ঈদের সালামি, আর ঘুরে বেড়ানোর মাঝেই আসলে ঈদের আনন্দ। সালামির বিষয় তো বলাই বাহুল্য। ছোট বেলায় টাকা-পয়সার বিষয়টি না বুঝলেও এটা বুঝতাম যে, ঈদে সালামি লাগবেই। এখন পরিবার, আত্মীয় স্বজনদের মাঝে ছোটদের সালামির আবদার পূরণ করতে হয়। টাকার অঙ্ক যাই হোক, নতুন নোট পেলে সবাই খুশি হয়। এজন্য নতুন নোটের জন্য আসলাম। কিন্তু এখানে বিনিময় মূল্য অতিরিক্ত চাচ্ছে। তারপরও উপায় নেই, নিতে হচ্ছে।’
টাকার পসরা সাজিয়ে বসেছেন জামাল উদ্দিন। তিনি জানালেন, প্রতি বছর এখানের একেকটি দোকানে ৫ লাখ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন হয়। এবার ব্যাংকগুলো লম্বা সময়ের জন্য বন্ধ থাকায় চাহিদা যেমন বেশি, নোটের সংকটও বেশি। ফলে দামও বেশি। জামাল উদ্দিন বলেন, ‘নতুন নোটগুলো আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে কিনে থাকি। এবার বেশি রেটে কিনতে হচ্ছে। তাই ক্রেতাদের কাছ থেকে একটু বেশি মূল্য নিতে হচ্ছে। মানুষজনও নিচ্ছেনও।’
শুধু শিশুরা নয়, যে কোনও বয়সী মানুষ নতুন নোট পছন্দ করেন। ঈদে প্রতি বছর সালামি হিসেবে নতুন নোট দেন ধানমন্ডির আসলাম খান। তিনি বলেন, ‘আত্মীয় স্বজনের মাঝে কেউ না কেউ আমার কাছ থেকে সালামিতে নতুন নোট পাবেনই। বাড়িতে যাওয়ার আগে এখান থেকে নতুন টাকা নিয়ে যাই। ব্যাংকে গেলে চাহিদা মতো নোট দেয় না, আবার লাইনে দাঁড়াতে হয়। এবার দেখছি টাকা বেশি চাচ্ছে, যেহেতু ঈদ কী আর করবো, বাড়তি টাকা দিয়েই নতুন নোট নিচ্ছি।’