প্রকাশ: ২০ এপ্রিল, ২০২২ ১২:০১ : অপরাহ্ণ
ইফতারের সময় টেবিল বসানো নিয়ে নিউমার্কেটের দুই দোকানির মধ্যে ঝগড়া হয়। তারপর লোক ভাড়া করে এনে দোকানে ভাঙচুর চালানো হয়। যা থেকে দুইদিন ধরে লঙ্কাকাণ্ড চলছে। অথচ এ ঘটনায় ঢাকা কলেজের ছাত্ররা চাঁদা চেয়েছিল বলে অভিযোগ তোলা হয়। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক পথচারীর মৃত্যুও হয়।
সামান্য একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাত গড়িয়ে ভোর, ভোর গড়িয়ে দুপুর হয়। কিন্তু তারপরেও যেন দু’পক্ষের তাণ্ডব থামছে না।
সোমবার (১৮ এপ্রিল) রাতে কী ঘটেছিল নিউমার্কেটে? আর এ ঘটনার শুরুইবা কীভাবে? এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে ওই রাতে কর্মরত নিরাপত্তারক্ষীর কাছ থেকে জানার চেষ্টা করা হয়। তারা বলেন, মার্কেটের ভেতরে দুই ফাস্টফুড দোকানির ঝগড়ার জেরেই ভাড়াটে মাস্তান এসে ভাঙচুর চালায় দোকানগুলোতে।
এদিকে সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনার সময়ের বিস্তারিত দেখা যায়। সোমবার (১৮ এপ্রিল) রাত আনুমানিক ১১টা। রামদা হাতে সাদা টি-শার্ট পরা এক তরুণের নেতৃত্বে ১০-১২ জনের একটি দল নিউমার্কেটে প্রবেশ করে। তারা ওয়েলকাম ফাস্টফুডে ঢুকে সেখান থেকে বেরিয়ে ক্যাপিটাল ফাস্টফুডের দিকে যায়। আর সেখানে দোকানের বাইরেই গণ্ডগোল শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ পর মার খেয়ে পালিয়ে যায় বহিরাগত তরুণরা। এরমধ্যে জানা যায়, তাদের মধ্যে কয়েকজন ঢাকা কলেজের ছাত্র ছিলেন। এই ঘটনার সূত্র ধরেই ছাত্রদের সঙ্গে ব্যবসায়ীসহ হকাররা সংঘর্ষে জড়ায়।
এ বিষয়ে ব্যবসায় সমিতি জানায়, কেউ কারো কথা শুনছে না। তো এভাবেই দায়টা সবাইকে নিতে হবে। সূত্রপাত যেহেতু আমাদের এখানে, আমাদেরও দায় নিতে হবে।
টানা ২৪ ঘণ্টা নিউমার্কেটের আশপাশের এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী, নিউমার্কেটের কর্মচারী ও পুলিশরে মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। এ ঘটনায় পথচারী, গণমাধ্যমকর্মী, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ আহত হন।
আহতদের মধ্যে মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) রাতে ঢাকা মেডিকেলে নাহিদ নামে এক যুবকের প্রাণ যায়। যুবকের মৃত্যুতে তার পরিবারের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে ঢাকা মেডিকেলের আশপাশ।
এ বিষয়ে নিহতের স্বজনরা বলেন, কাজের উদ্দেশে পণ্য ডেলিভারি দেয়ার সময় সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে। মামলা করলে কার নামে করব? আমরা তো নিরীহ গরীব মানুষ।
প্রসঙ্গত, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় প্রায়ই সাধারণ মানুষ বলি হন। নিউমার্কেটের ঘটনাও যেন তারই পুনরাবৃত্তি। এখানে ব্যবসায়ী ও ছাত্ররা সংঘর্ষে জড়ালেও প্রাণ গেল নিরীহ পথচারীর। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই হত্যার দায় নেবে কে?