প্রকাশ: ৭ এপ্রিল, ২০২২ ৪:৪৮ : অপরাহ্ণ
গ্যাং সদস্যদের পর এল সালভাদর সরকারের টার্গেটে পরিণত হলেন সংবাদকর্মীরা। বুধবারই (৬ এপ্রিল) মধ্য আমেরিকার দেশটির পার্লামেন্ট আইন সংস্কার করে। নতুন যুক্ত ধারা অনুযায়ী, অপরাধীদের পক্ষে তথ্য সম্প্রচার দায়ে সাংবাদিকদের ভোগ করতে হবে ১০ থেকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড। এমনকি বাতিল হতে পারে গণমাধ্যমের লাইসেন্সও। এই বিধানের ফলে ঘরে-বাইরে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছে নায়িব বুকেলে সরকার।
গত ১০ দিন ধরে এল সালভাদরে চলছে সাঁড়াশি অভিযান। মধ্য আমেরিকার দেশটির বড় শহরগুলোতে গ্যাং মেম্বারদের সন্ধানে ঝড় তুলেছে নিরাপত্তা বাহিনী। তাদের দাবি, কারাবন্দি করা হয়েছে ৬ হাজারের বেশি অপরাধীকে।
দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফ্রান্সিস মেরিনো মনরয় বলেন, কমপক্ষে ৫০টি এলাকা ঘেরাও করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। সেখান থেকে কাউকে ঢুকতে বা বেরোতে দিচ্ছি না আমরা। চলছে ঘরে ঘরে তল্লাশি। হতাহতের ঘটনা এড়াতেই এ কৌশল। কেউ আত্মগোপনে রয়েছে কিনা, সেই সন্দেহে চলছে রুটিন অনুসন্ধান।
বন্দিদের ওপর কারাগারে চালানো হচ্ছে অমানুষিক নির্যাতন, মানবাধিকার কর্মীদের এ অভিযোগে উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ। অপরাধী না হয়েও মিলছে না পরিবার বা আইনজীবীর সাথে কথা বলার সুযোগ। পরোয়ানা ছাড়াই হাজতে থাকতে হবে ১৫ দিন।
ওএইচসিএইচআর মুখপাত্র লিজ থ্রসেল বলছেন, এল সালভাদরে সরকার যেসব উদ্যোগ নিচ্ছে সে ব্যাপারে চরম উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ। কোনো পরোয়ানা ছাড়াই ৬ হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হলো। বন্দিদের ওপর চালানো হচ্ছে অমানবিক অত্যাচারও। তার ওপর সাংবাদিকদের ফেলা হলো শাস্তির আওতায়। যা বাক স্বাধীনতা হরণের শামিল।
বুধবার পার্লামেন্টে সংস্কার আনা হয় অপরাধ বিষয়ক আইনে। বলা হয়, গ্যাং মেম্বারদের পক্ষে তথ্য সম্প্রচার করলেই ১০ থেকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। লাইসেন্স বাতিলের বিধানও রাখা হয়েছে আইনে।
মধ্য আমেরিকার দেশটির সাংবাদিক সংস্থার প্রেসিডেন্ট সিজার ফাগওয়াগা বলেন, সালভাদরে সত্যিকার অর্থে যা ঘটছে, সেটি যেন বর্হিবিশ্বে প্রকাশ না পায়, সে জন্যই সংবাদকর্মীদের বিরুদ্ধে ১০-১৫ বছরের কারাদণ্ডের বিধান। মূলত মার্কিন নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে অপরাধীদের হস্তান্তর করতে চায় না প্রশাসন। জিইয়ে রাখতে চায় গ্যাং কালচার। ধরপাকড় শুধুই নাটকীয়তা। তলে তলে সন্ত্রাসীদের সরকারের আঁতাত রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মার্চের শেষ সপ্তাহে, গ্যাংগুলোর দৌরাত্ম্যে খুন হন ৯০ বেসামরিক নাগরিক। শুধু ২৬ মার্চই হত্যা করা হয় ৬২ জনকে। পরিস্থিতি মোকাবেলায়, জরুরি অবস্থা জারি করেন প্রেসিডেন্ট নায়িব বুকেলে।
1000