চট্টগ্রাম, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫ , ৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাঞ্জাবে হাসপাতালের ছাদে লাশ আর লাশ!

প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর, ২০২২ ৪:২১ : অপরাহ্ণ

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুলতানে একটি হাসপাতালের ছাদে পচতে থাকা শতাধিক লাশের সন্ধান পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীসহ পুরো প্রদেশের মানুষ। স্থানীয় সরকার ঘটনাটি তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এএনআই নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চৌধুরী পারভেজ এলাহি এ ব্যাপারে রাজ্যের বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা শিক্ষা সচিবের কাছে জবাব চেয়েছেন। মৃতদেহগুলোকে ছাদে ফেলে রেখে অমানবিক কাজ করা হয়েছে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে বিষয়টি তদন্তে একটি ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করেছে পাঞ্জাব সরকার। অন্যদিকে নিশতার মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও এ ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে।

পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা তারিক জামান গুজ্জার বলেছেন, এক ব্যক্তি তাকে নিশতার হাসপাতালের মর্গের ছাদে পচা মৃতদেহের কথা জানিয়েছিলেন। ওই ছাদে যেতে চাইলে সেখানকার কর্মীরা মর্গের দরজা খুলতে সম্মত হচ্ছিল না। পরে এফআইআর দায়েরের হুমকি দেওয়ার পর তারা সেখানে যেতে দেয়।

তিনি বলেন, যখন মর্গটি খোলা হয়, সেখানে অন্তত ২০০টি লাশ পড়ে থাকতে দেখেন তারা। পচনশীল এসব মৃতদেহ ঢেকেও রাখা হয়নি। এমনকি নারীদের শরীরও ঢাকা ছিল না। পরে সেখানকার ডাক্তারদের কাছে বিষয়টির ব্যাখ্যা চাইলে তারা বলেন, এগুলো মেডিকেল ছাত্রদের ব্যবহারের উদ্দেশ্যে রাখা হয়েছে।

গুজ্জার বলেন, চিকিৎসা শিক্ষার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত মৃতদেহগুলোকে জানাজার পর যথাযথভাবে দাফন করা উচিত ছিল, কিন্তু সেগুলোকে অসম্মানের সঙ্গে ছাদে ফেলে রাখা হয়েছিল।

এদিকে দেশটির সাবেক একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুনিস এলাহি বলেছেন, এ ঘটনায় মূলত অসম্মানের কিছু নেই। তিনি নিশতার মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানাটমি বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের প্রতিক্রিয়া সংযুক্ত করেছেন।

সেখানে যুক্তি দেওয়া হয়, এসব অজ্ঞাত দেহ পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য হস্তান্তর করেছে এবং প্রয়োজন পড়লে এগুলো এমবিবিএস ছাত্রদের শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যায়।

সেখানে আরও বলা হয়, এখানে অসম্মানের কোনো ইস্যু নেই। মৃতদেহগুলো থেকে হাড়গুলো সংগ্রহ করার পর সর্বদা সঠিকভাবে কবর দেওয়া হয়। আর এটি হাসপাতালের নিয়মিত কার্যক্রমেরই অংশ।

এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই হাসপাতালের হিমাগারের বেশিরভাগ ফ্রিজারই নষ্ট। সেখানে পাঁচটি ফ্রিজারে ৪০টি মৃতদেহ সংরক্ষণ করা যেত। কিন্তু বহু বছর ধরেই মাত্র একটি ফ্রিজার ভালো রয়েছে। সেখানে সাত-আটটি মৃতদেহ রাখা যায়।

অথচ মাসে ওই মর্গে ১৫-২০টি অজ্ঞাত মৃতদেহ আসে। এসব মৃতদেহ এক মাস হাসপাতালে রাখা হয় এবং নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলে পরীক্ষাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

Print Friendly and PDF